স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা ইউনিয়নের গ্রাম দিগধাইর। গত দশদিন আগে বানের পানিতে তলিয়ে যায় গ্রামটি। গ্রামটিতে নেই কোন সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, নিরাপদ উঁচু জায়গা। টানা পানিবন্দি থেকে খাবারের সংকটে ভুগেন এই গ্রামের মানুষ।
নৌকায় কিছু খাবার ৫ মাইল দূরের বাজার থেকে এনে আশেপাশের মানুষের মধ্যে বিলি করা হলেও যেখানে বেশি পানি উঠেছে সেখানে যেতে পারেনি কেউ। এমনকি একটি মসজিদে আশ্রয় নেয়া ১১০ টি পরিবার দিন পার করছিল অর্ধাহারে। বিভিন্ন মাধ্যমে ত্রাণের জন্য আহ্বান করা হলেও কোন সাড়া মেলেনি।
সবশেষ দিগধাইর গ্রামের এক বাসিন্দার ফোনে সাড়া দেন সুদূর নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলার সমাজসেবী আলহাজ্ব আবু তাহের তালুকদারের টীমের স্বেচ্ছাসেবকরা। কুমিল্লার লাকসাম থেকে অন্তত সাড়ে তিন শ কিলোমিটার দূর থেকে প্রায় ১৫ ঘণ্টা ভ্রমণ শেষে সোমবার রাতে এসে লাকসাম উপজেলার খিলা বাজারে পৌঁছায় দলটি। স্থানীয় বাজার থেকেই কেনা হয় ১১০ টি পরিবারের জন্য রান্না করা খাবারের বিভিন্ন আইটেম। মধ্যরাতেই নৌকায় করে পৌঁছানো হয় আশ্রয় কেন্দ্রে। আড়াই ঘন্টা বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুর্যোগ কবলে তো মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে বস্তা ভর্তি বাজার পৌঁছায় ভিন্ন জেলা থেকে আসা এই তরুনদেরর দলটি।
মসজিদে আশ্রয় নেয়া যুবক শামীম হোসাইন জানান, দীর্ঘ সাত দিন পানিবন্দি থাকার পরও কেউ আমাদের জন্য এত পরিমান প্রাণ নিয়ে আসেনি। আশেপাশের গ্রাম থেকে পাড়া প্রতিবেশীরা কিছুটা সহায়তা করেছে। এতদুর নেত্রকোনা থেকে যারা এসেছে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।
নেত্রকোনা থেকে আসা যুবকদের একজন তরিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, দীর্ঘ গ্রাম থেকে আমার এক বন্ধুর ফোন পেয়ে আমরা প্রস্তুত হই কুমিল্লায় আসার। নেত্রকোনা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমাজসেবী আলহাজ্ব আবু তাহের তালুকদার আমাদের দ্রুত সহযোগিতার টাকা দেন । সেই টাকা নিয়ে রওনা হয়েছি। অপরিচিত এলাকায় এসে দুর্গত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে ভালো লাগছে।
কুমিল্লা বন্যা কবলিত এলাকা গুলোতে শুধু স্থানীয়রাই নয় জেলার বাইরে থেকে অন্তত দেড় হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রাণ নিয়ে ও উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করছে। তাদের অনেকের কাছেই কুমিল্লা একেবারেই অপরিচিত। তারপরও মানবতার সেবায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দলে দলে আসছেন তরুণরা। বন্যা কবলিতদের সহযোগিতা করছেন নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার। এছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে খাবার,ঔষধ ও জামা কাপড় বিলি করছেন।
আরো দেখুন:You cannot copy content of this page